ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ২০২৫

 ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ২০২৫ , ড্রাইভিং লাইসেন্স হল একটি সরকারি অনুমোদন অর্থাৎ আপনার যদি একটি গাড়ি থাকে মোটরসাইকেল প্রাইভেট কার ছোট মাইক্রোবাস তাহলে আপনার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স অপরিহার্য।

অর্থাৎ এইসব গাড়ি বাংলাদেশের রাস্তায় চলাচলের জন্য অর্থাৎ যে গাড়িটিকে পরিচালনা করবে চালকের সরকারিভাবে অনুমোদন লাগে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে আর সেটি হচ্ছে ড্রাইভিং লাইসেন্স যা কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার আপনাকে সরবরাহ করবে আজকের আর্টিকেলে তাই আলোচনা করব ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে পাওয়া যাবে বাংলাদেশ সরকারের থেকে। 

সূচীপত্র ঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ২০২৫ 

ড্রাইভিং লাইসেন্স কি 

লাইসেন্স কি? লাইসেন্স হচ্ছে এমন একটি জিনিস আপনার যদি যেকোনো দেশের রোডে বা রাস্তায় যেকোনো ধরনের যানবাহন ড্রাইভিং বা চালাতে হয় তাহলে সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স প্রদান করে BRTA, যদি আপনার কাছে  সরকার অনুমোদিত লাইসেন্স না থাকে তাহলে আপনি আইনগতভাবে কোন ধরনের যানবাহন চালানোর জন্য বৈধ নন, সে ক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশ বাংলাদেশ নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক জরিমানা সহ আপনার নামে মামলা হতে পারে।

আরো পড়ুনঃফেসবুক থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যাবে

সেক্ষেত্রে রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি অপরিহার্য জিনিস এটির কোন বিকল্প নেই আর এই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে আপনাকে কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। এবং নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম নীতি মেনে বাংলাদেশ সরকার আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করবেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পর আপনি বাংলাদেশের রাস্তায় বা অন্য দেশের রাস্তায় যানবাহন চালানোর জন্য অনুমোদন পাবেন।

বাংলাদেশের যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বিভিন্ন ধরনের নিয়ম নীতি রয়েছে,  আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব কিভাবে বাংলাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় অর্থাৎ ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে তা নিয়ে আলোচনা করব আশা করি আজকের আলোচনাটি বা আর্টিকেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে আপনাদের জন্য।

ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা

রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য বা যেকোনো ধরনের যানবাহন চালানোর জন্য সেটা হতে পারে মোটর সাইকেল, প্রাইভেট কার, বা্‌স,  ট্রাক বা অন্য কিছু প্রতিটা যানবাহন চালানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি  দরকারি জিনিস ড্রাইভিং লাইসেন্স সরকার অনুমোদিত একটি ডকুমেন্টস । 

আপনার একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে তার মানে বাংলাদেশের রাস্তায় আপনি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত একজন দক্ষ চালক। সেক্ষেত্রে যদি আপনি বাংলাদেশের রাস্তায় যে কোন ধরনের গাড়ি চালাতে চান বা যানবাহন চালাতে চান তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। যদি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে আপনাকে পড়তে হবে বিভিন্ন বিড়ম্বনায় পুলিশ বা ট্রাফিক পুলিশ যে কোন সময় যে কোন জায়গায় আপনাকে আটকে দিতে পারে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স আপনার একটি ডকুমেন্ট। ড্রাইভিং লাইসেন্স  আপনাকে একটি সাক্ষ্য দেয় যে আপনি যেকোনো ধরনের যানবাহন চালানোর জন্য পরিপূর্ণভাবে উপযুক্ত  ব্যক্তি এবং সরকার অনুমোদিত একজন ব্যক্তি আপনি সরকার এর সব নিয়ম কানুন মেনে বাংলাদেশের রাস্তায় গাড়ী চালাতে পারবেন কেউ আপনাকে বাধা দিতে পারবে না । 

ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়ার আগে কি কি বিষয় জানা লাগবে

ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার আগে কিছু বিষয়ে জানা অত্যন্ত জরুরি বলা ভালো ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণ দুই ধরনের হয় ।

  • ১। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স 
  • ২। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

১। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স 

চলুন জেনে নেওয়া যাক পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স বলতে কি বুঝায় অর্থাৎ যদি আপনি সে ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্বারা পেশাগতভাবে কোন কাজ করে থাকেন অর্থাৎ কোন জায়গাতে কাজ বা চাকরি বা ভারী যানবাহন চলনা  করেন তবে আপনাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে। পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করা একটু ঝামেলা পণ্য এবং জটিল তার কারণ হিসেবে বলা যায় এই পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্বারা আপনি ভারী যানবাহন চলনা করতে পারবেন। তাই এই পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর প্রক্রিয়াটা একটু সময়সাপেক্ষ এবং জটিল ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার আগে আপনাকে এ বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে আপনি কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স করবেন।

২। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স

অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স অর্থাৎ আপনি যদি কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স করেন অর্থাৎ কোন গাড়ি চালনা করবেন ব্যক্তিগতভাবে তাহলে আপনাকে অপ্রেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সটা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স থেকে একটু সহজ পদ্ধতি। কারণ আপনি ব্যক্তিগত ভাবে এই লাইসেন্স করবেন এবং আপনি আপনার গাড়ি নিজেই পরিচালনা করবেন সেটা হতে পারে মোটরসাইকেল হতে পারে প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স  কে সাধারণত বলা হয় লাইট ড্রাইভিং লাইসেন্স। 

আপনার শারীরিক কন্ডিশন অর্থাৎ আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ বা গাড়ি চালাতে সক্ষম কিনা সে বিষয় গুলো আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়ার আগে, আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং  বয়স মানে আপনি পূর্ণবয়স্ক কিনা অর্থাৎ ডাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার বয়স হয়েছে কিনা কারণ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার জন্য বয়স একটি মুখ্য বিষয়।

বর্তমানে প্রতিটা ক্ষেত্রেই ডিজিটালাইট হবার কারণে এসব বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে শুধু লাইসেন্স নিলেই হবে না রাস্তায় চলাকালীন বিভিন্ন নিয়ম কানুন রয়েছে। যেমন আপনি যদি পাসিং দেন অর্থাৎ আপনি একটি গাড়িকে ওভারটেক করেন তাহলে আপনাকে কি ধরনের সিগনাল দিতে হবে আবার আপনি যখন আপনাকে কাউকে পাশে দিতে হলে কি ধরনের সিগনাল দিতে হবে এমন বিষয় গুলোতে অভিজ্ঞ হতে হবে।

আপনি রাস্তার কোন পাশ দিয়ে গাড়ী চালাবেন অপরপক্ষ থেকে আসা গাড়ি আপনাকে সিগন্যাল দিলে কি সিগন্যাল দিচ্ছে এগুলো জানতে হবে এক কথায় রাস্তার নিয়ম কারণ গাড়ি চালানোর বিষয়ে সম্পূর্ণ বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে বা জানা থাকা লাগবে। 

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ

ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার জন্য কিছু নিয়ম কানুন এর মাধ্যমে আগাতে হয় সেই সব নিয়মকানুন ঠিকভাবে পালন করে বিভিন্ন ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র জমা করে তারপর ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্ত হবে সরকারি কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে যে নিয়ম নীতিগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

যোগ্যতাঃ

লাইসেন্স নেওয়ার পূর্বে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে এবং আপনাকে প্রমাণ করতে হবে আপনি বাংলাদেশী অর্থাৎ বাংলাদেশের নাগরিক ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন হবে।

সাধারণত নন প্রফেশনাল অর্থাৎ অপারেশাদার লাইসেন্সের জন্য নূন্যতম বয়স হচ্ছে ১৮ বছর এবং প্রফেশনাল বা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স হচ্ছে ২০ বছর বা তার ওপরে হতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা একটু শিথিল হয় অর্থাৎ শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণী পাস সমতুল্য হলেও হয়।

শারীরিক ও মানসিকভাবে  সুস্থ থাকতে হবে প্রয়োজন হতে পারে আপনাকে একজন চিকিৎসকের কর্তৃক সনদ ব্যবস্থা করতে হতে পারে। এটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রাথমিক আবেদনের অর্থাৎ যোগ্যতা যাচাইয়ের প্রথম ধাপ।

লার্নার লাইসেন্সঃ

লার্নার লাইসেন্স বলতে সাধারণত বুঝায় আপনি প্রাথমিক যে যোগ্যতা যাচাই হবে অর্থাৎ প্রাথমিক আবেদনের পর আপনাকে একটি লাইসেন্স দেওয়া হবে যেটির মেয়াদ নির্দিষ্ট থাকে অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পরে আপনাকে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেওয়ার জন্য ডাকা হবে লার্নার লাইফ হিস্ট্রি দেওয়ার কারণ হচ্ছে আপনাকে শিক্ষা নেবিস হিসাবে সে নির্দিষ্ট টাইম ও সময় আপনাকে গাড়ি চালানো শিখতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরে আপনাকে লিখিত পরীক্ষা ভাইবা অর্থাৎ মৌখিক পরীক্ষা এবং প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে পরীক্ষায় পাশ করার পর করলে ১৫ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে আবেদন করার জন্য আপনি অনুমোদিত ব্যক্তি হবেন লার্নাল লাইসেন্স পাশ করার পর সার্টিফিকেট সংস্কৃত সার্টিফিকেট পাশকৃত সহ আরো সঙ্গে কাগজপত্র দিয়ে চূড়ান্ত লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে।

চূড়ান্ত বা পূর্ণ লাইসেন্স এর জন্য আবেদনঃ

লার্নার লাইসেন্সের সমস্ত প্রক্রিয়া সমাপ্ত করার পর অর্থাৎ লার্নাল লাইসেন্স বা প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য যে লাইসেন্স দেয়া হয় সেই পরীক্ষা দেওয়ার পরে, পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পরে আপনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ পূর্ণ লাইসেন্স বা চূড়ান্ত লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।  চূড়ান্ত লাইসেন্স আবেদন করার জন্য আপনাকে আবেদনের ফরম পূরণ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র,  শিক্ষাগত সনদ,  চিকিৎসা সনদ সহ এমন সব কাগজপত্র একসাথে জমা দিতে হবে প্রতিটি লাইসেন্সের জন্য একটি সরকারি ফি আছে । 
সেই ফি জমা দিতে হবে অর্থাৎ পরিশোধ করতে হবে উপরোক্ত কাগজপত্র এবং টাকা পরিশোধ করে পরিশোধকৃত রশিদ সহ সরকারি BRTA অফিসে জমা দিতে হবে।নির্দিষ্ট টাইমে বা সময়ের পরে আপনাকে সিরিয়াল অনুযায়ী বায়োমেট্রিক তথ্য অর্থাৎ ছবি স্বাক্ষর, আঙ্গুলের স্ক্যান সংগ্রহ করার জন্য ডাকা হবে এবং নির্ধারিত দিন ও সময়ে ড্রাইভিং প্র্যাকটিস এর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ডাকা হবে সব কাগজপত্র সঠিকভাবে করা হলে লাইসেন্স কার্ড জারি করা হয় কিন্তু সে ক্ষেত্রে কিছু সময় লাগে।

কারণ শত শত হাজার হাজার মানুষ ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করে থাকে যার ফলে সিরিয়াল অনুযায়ী আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি হবে এবং এই সময়ের মাঝে আপনার দেওয়া তথ্যগুলো সঠিক আছে কিনা তার জন্য সরকার একজন পুলিশ পাঠাবে আপনার ঠিকানায়। যে ঠিকানা আপনি ফর্মে উল্লেখ করে থাকবেন উক্ত পুলিশ সমস্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে BRTA অফিসে জমা দেবে সব কাজ হয়ে গেলে আপনাকে লাইসেন্স সংগ্রহ করার জন্য BRTA অফিস থেকে ডাকা হবে এবং আপনাকে লাইসেন্স প্রদান করা হবে।  

ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তার বর্ণনা নিজে দেওয়া হল।তবে অনেক সময় অনেক কিছু পরিবর্তন হয় সেক্ষেত্রে আপনার নিকটবর্তী BRTA অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করা সবথেকে উত্তম। প্রাথমিক ধারণা হিসেবে বা যেসব কাগজপত্র না লাগলেই হবে না সেগুলো উল্লেখ করা হলো। 

  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম সনদ বা পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • শিক্ষকদের যোগ্যতা সনদপত্র সর্বনিম্ন হিসেবে অষ্টম শ্রেণী পাস
  • ঠিকানা প্রমাণসহ অর্থাৎ আপনার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল বা পানির বিল এর ফটোকপি। যদি আপনি অনলাইনে আবেদন করেন তাহলে অনলাইনে সিস্টেমে স্ক্যান করে আপলোড করে দিতে হবে।
  • সদ্য তোলা রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি বা নির্ধারিত মাপে যা BRTA নির্ধারণ করবে।
  • গাড়ি বা মোটরসাইকেল এর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার যদি থাকে ।
  • উপরোক্ত কাগজপত্র শুধুমাত্র নন প্রফেশনাল বা অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি আপনি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স বা প্রফেশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করেন তাহলে অতিরিক্ত কিছু কাগজ প্রয়োজন হবে। কারণ পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে অনেক কিছুই যাচাই-বাছাই করতে হয় যার ফলে কিছু অতিরিক্ত কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। 

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যে টাকা লাগে তা বর্ণনা করা হলো আপনি দুই ধরনের লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে অর্থাৎ পেশাদার বা অপেশাদার যে ধরনের লাইসেন্সয় করেন না কেন প্রাথমিকভাবে আপনাকে লার্নাল লাইসেন্স করতেই হবে এবং লার্নার লাইসেন্স করতে আপনাকে ফ্রি জমা দিতে হবে একক ক্ষেত্রে অর্থাৎ শুধুমাত্র মোটরসাইকেল বা শুধুমাত্র হালকা মটর যান সেক্ষেত্রে আপনাকে জমা দিতে হবে ৩৪৫ টাকা এবং সংযুক্তভাবে অর্থাৎ মোটরসাইকেল এবং হালকা মোটরযান একসাথে হলে আপনাকে জমা দিতে হবে ৫১৮ টাকা এই টাকা শুধুমাত্র লার্নাল লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে জমা দিতে হবে।

পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স বা স্মার্ট কার্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে জমা দিতে হবে দশ বছরের মেয়াদের জন্য ২৫৪২ টাকা যা অপেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং যদি আপনি পাঁচ বছর মেয়াদের পেশাদার লাইসেন্সের ফি জমা দেন তাহলে আপনাকে দিতে হবে ১৬৮০ টাকা।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন কি ধরনের লাইসেন্স করলে কত টাকা দিতে হবে এবং কখন কোন টাকা পরিশোধ করতে হবে আমি চেষ্টা করেছি সম্পূর্ণ বোঝানোর জন্য যাতে আপনার উপকার হয়।

ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কি কি সমস্যা হবে   

ড্রাইভিং লাইসেন্স রাস্তায় গাড়ি চালানোর জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস বা ডকুমেন্টস। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে আপনি সরকার অনুমোদিত ব্যক্তি নয় যার ফলে বিভিন্ন আইনি জটিলতায় আপনাকে পড়তে হবে।ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার ফলে আপনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।

আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় উভয়েই হয়ে থাকে সেক্ষেত্রের ড্রাইভিং লাইসেন্স সরকার অনুমোদিত একটি বৈধ ডকুমেন্ট যা দিয়ে আপনি সহজেই রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবেন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে আপনি রাস্তার নিয়ম কানুন জানতে পারবেন কারণ রাস্তার নিয়ম কারণ বিষয়ে লিখিত পরীক্ষা নিয়ে যাচাই বাছাই করে আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হবে।

যার ফলে সড়ক দুর্ঘটনা থেকে আপনি মুক্ত থাকবেন আশা করা যায়। সেজন্য একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি প্রয়োজনীয় জিনিস এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার ফলে বিভিন্ন রকম সমস্যায় পড়তে হবে। 

ড্রাইভিং লাইসেন্সের অনলাইন ও অফলাইন আবেদন পদ্ধতি

বর্তমানে অনেক কাজ অনলাইনে করা হয় সেক্ষেত্রে সময় যেমন বাজে কাজটা অনেক সহজ হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি অনলাইন বা অফলাইন দুই পদ্ধতিতে আবেদন করতে পারবেন অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে ঃ
  • প্রথমে বাংলাদেশের অনুমোদিত  BRTA এ সেবা পোর্টাল BSP একাউন্ট খুলুন
  • আবেদন ফরম  পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস স্ক্যান করে পোর্টালে আপলোড করুন।
  • নির্ধারিত ফি প্রদান করুন অনলাইন বা ব্যাংকিং চালানের মাধ্যমে
  • নির্ধারিত তারিখে বায়োমেট্রিক আঙ্গুলের ছাপ এবং লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করুন
  • এরপরে নির্দেশিত সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড ইস্যু হবে এবং আপনাকে নোটিফাই করা হবে।
অফলাইনে ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে যে BRTA অফিস রয়েছে সেখানে গিয়ে আবেদন করুন। যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি অবলম্বন করতে বলে অফিস থেকে তা অবলম্বন করুন এবং নির্দিষ্ট টাইমে সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করুন।তবে আজকাল অধিকাংশ লোক সহজলভ্য এবং সময়ের অভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অনলাইন পদ্ধতিটাকেই বেশি বেছে নেই। 

পরামর্শ ও টিপ

সহজ ভাষায় কিছু তথ্য বা পরামর্শ আজকের আর্টিকেলের দিলাম আপনার জন্য আশা করি পরামর্শ ও টিপসগুলো আপনার সহযোগিতায় অনেকাংশে কাজে দেবে।
  • প্রকৃত তথ্য যাচাই করুন নিয়ম ও ফি মাঝে মাঝে পরিবর্তন হয় তাই সংশ্লিষ্ট অফিস বা ওয়েবসাইটে নিয়ম ও ফি গুলো জেনে নিলে ভালো হয়।
  • ফটো সনদপত্র এন আই ডি ইত্যাদি স্ক্যান ও ফিজিক্যাল কপি ঠিকভাবে রাখুন যাতে যখনই প্রয়োজন হয় তখনই সেটা দেওয়া সম্ভব হয়।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য দুটো পদ্ধতির মধ্যে অনলাইনে আবেদন করুন যার ফলে আপনার সময় বাঁচবে এবং আপনি হয়রানি থেকে মুক্ত হবেন। 
  • লিখিত ভাইভা ও প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা রয়েছে যেহেতু সেহেতু ট্রাফিকের জন্য গাড়ি নিয়ন্ত্রণ রিজার্ভ পার্কিং বা রাস্তার নিয়ম কানুন সম্বন্ধে অবগত থাকুন।
  • অনেক ক্ষেত্রে অনেকেই দালাল বা ব্রোকার এর সহযোগিতা নেই সব কাজ নিজেই করেন যার ফলে অতিরিক্ত খরচ ও ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকবেন। 
  • লাইসেন্স কার্ড এর মেয়াদ পেরিয়ে গেলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বা আইন অনুযায়ী সমস্যা হতে পারে সে ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্ড নবায়ন করুন
  • আপনার লাইসেন্স কার্ড যদি হারিয়ে যায় সে ক্ষেত্রে কি করতে হবে এটা জেনে রাখুন। 

প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।

উত্তরঃ ডাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ BRTA অফলাইন এবং অনলাইনে দুই পদ্ধতিতে আবেদন করতে হয়।

প্রশ্নঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স কি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস?

উত্তরঃ অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী রাস্তায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে রাখতে হবে।

প্রশ্নঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ফি কত?

উত্তরঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স সাধারণত দুই ধরনের হয় পেশাদার এবং অপেশাদার পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে তিন হাজার টাকা এবং অপারেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ২১৯৮ টাকা খরচ হয়। তবে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মেয়াদ পাঁচ বছর এবং অপের সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ ১০ বছর ।এ ফি মাঝে মাঝে পরিবর্তন হয় সে ক্ষেত্রে স্থানীয় বিআরটিএ  অফিসে গিয়ে বা অনলাইনে জানা যায়।

প্রশ্নঃ  ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে কি করতে হবে?

উত্তরঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে স্থানে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে একটি জিডি করতে হবে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য পুনরায় আবেদন করতে হবে বাংলাদেশ বিআরটিএ অফিসে।

প্রশ্নঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কি ধরনের জরিমানা হতে পারে?

উত্তরঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে বাংলাদেশ সড়ক  ২০১৮ আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের জেল হতে পারে অনেক ক্ষেত্রে উভয়েই হতে পারে।

প্রশ্নঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র লাগে?

উত্তরঃ ডাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার জন্য পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাস, এবং আপনি মানসিকভাবে সুস্থ প্রয়োজনে একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে সনদ দিতে হতে পারে। 

শেষ কথা

সর্বশেষ হিসেবে বলতে চাই ড্রাইভিং লাইসেন্স অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি জিনিস বা ডকুমেন্টস লাইসেন্স হচ্ছে আপনার পরিচয় আপনার অনুমোদন আপনি রাস্তায় গাড়ি চলার জন্য উপযুক্ত তার একটি প্রমাণ ড্রাইভিং লাইসেন্স করলে আপনার  আইনগত জটিলতায় পড়তে হবে না। 

উপরোক্ত আলোচনায় আমি চেষ্টা করেছি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে ২০২৫ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে কি কি জটিলতায় বা সমস্যায় ভুগতে হবে এবং তার সমাধান এবং সমস্ত পদ্ধতিগুলো আলোচনা করার চেষ্টা করেছি আমি আশা করি উপরোক্ত আলোচনায় বা আর্টিকেল আপনার জন্য অত্যন্ত উপকারী আশা করি আপনার মনের সমস্ত তথ্য এখানে পেয়ে যাবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টাইম বিডি ২৪ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url